
ইদুরের গর্তের ধানে শীতের পিঠা-পুলি খাওয়ার সাধ মেটাবেন আজিফা বেওয়া
পলাশ,সারিয়াকান্দি(বগুড়া)থেকেঃ
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে সোনালী আমন ধান কাটা শুরু হয়েছে। মাঠে মাঠে আমন ধান কাটার ব্যস্তসময় পার করছে চাষিরা। বাড়িতে কৃষাণীরা কাটা -মাড়াই, ধান সিদ্ধ-শুকানোর কাজে ফুসরত পাচ্ছেন না। সবার বাড়িতে আমন ধানের মৌ -মৌ গন্ধে মুখরিত হয়েছে। জমি-জমা না থাকাই যারা আমন ধান করতে পারেননি তারা পরেছেন চিন্তায়। এরকম একটি পরিবার সরিয়াকান্দি উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের বড়ইকান্দি গ্রামের মৃত মুনু জায়দারের স্ত্রী আজিফা বেওয়া (৫৫) এর। আজিফা বেওয়া কেটে নেওয়া ধানের জমি থেকে পরে থাকা ও ইদুরের গর্ত থেকে ধান সংগ্রহ করে হলেও নাতি-পুতিদের পিঠা-মুঠা খাওয়াবেন।
এমন আশা নিয়ে তিনি মাঠে মাঠে ওই ভাবে ধান সংগ্রহ করে চলেছেন দিনভর। জানা যায়, ওই আজিফা বেওয়ার স্বামী মারা গেছেন প্রায় ৮ বছর পূর্বে। জমি-জমাও নেই তার। যেখানে ধানের আবাদ করে আমন ধান সংগ্রহ করবেন তিনি। বাড়ির জায়গাটুকুই তার একমাত্র সম্বল। পরনে ছেড়া কাপড় নিয়ে ঘুরছেন ধান কাটার মাঠে মাঠে। জমিতে ঝাড়- দিয়ে ধান সংগ্রহ করছেন তিনি। এছাড়াও ইদুরের গর্তে হাত দিয়ে নিয়ে যাওয়া ধান সংগ্রহ করছেন। এরকম কাজে সাপ-পোকা মাকড়ের ঝুঁকি জেনেও তাতে কোন ভয় লাগেনা তার। আজিফা বেওয়া বুধবার সকালে দৈনিক তৃতীয় মাত্রা প্রতিনিধিকে বলেন, আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর আমি খুব অসহায় হয়ে পড়ি। ৩ মেয়ে ২ ছেলেকে নিয়ে আমার সংসার। এর মধ্যে আবার তাদের ছেলে-মেয়ে, আমার মোট নাতি-পুতি রয়েছে সব মিলিয়ে ৯ জন। ছেলেরা অন্যের দোকানে কাজ করে। যে মাইনে পায় তা দিয়ে তাদের দিন যাওয়াই কঠিন। নাতি-পুতিদের অগ্রহায়ন মাসের শীতের পিঠা-পুলি খাওয়ানোর সাধ্য তাদের নেই। যার জন্য আমি মাঠে-মাঠে ওই ভাবে ধান সংগ্রহ করছি। তিনি আরও বলেন, দিনে কম করে হলেও ৮ থেকে ৯ কেজি করে ধান পেয়ে থাকি আমি। ধান কাটার মৌসুম জুড়ে ওই ভাবে ধান সংগ্রহ করতে পারলে কম পক্ষে মন তিনেক ধান সংগ্রহ করতে পারবো আমি। তা দিয়ে নতুন ধানের ভাত ছাড়াও নাতি-পুতিদের শীতের পিঠা-মুঠো খাওয়ানোর সাধ মিটবে আমার।
উপজেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কুদরত আলী বলেন, ইঁদুর আমাদের একটা ফসলের বড় শত্রু। ইঁদুর ৩ থেকে ১০ ভাগ পর্যন্ত ফসল নষ্ট করে থাকে।
comment / reply_from
related_post
Popular Posts
newsletter
newsletter_description