
আজ অভিবাসী দিবস
স্টাফ রিপোর্টার : আজ আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস। বিশ্বব্যাপী অভিবাসী ও তাদের পরিবারের মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিবছরের ১৮ ডিসেম্বর ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস’ হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
এবারও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস’ যথাযথ গুরুত্বের সাথে উদযাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। অভিবাসন সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজনকে সঙ্গে নিয়ে নানা আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করা হচ্ছে।
এ বছরের আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসের মূল ও জাতীয় অনুষ্ঠান রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে। অন্যান্য বছরের মতো এবারও এই অনুষ্ঠানে সিআইপি (এনআরবি) সম্মাননা এবং প্রবাসীদের মেধাবী সন্তানদের বৃত্তি প্রদান করা হবে। মূল অনুষ্ঠানের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সারাদেশে উদযাপিত হবে দিবসটি। উদযাপনের অন্যান্য অংশে আছে জাতীয় দৈনিকে ক্রোড়পত্র প্রকাশ, বর্ণাঢ্য স্যুভেনির প্রকাশ, প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকসসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রচারণা।
দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক বাণীতে বলেন, অভিবাসনে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আইন ও নীতি কাঠামো প্রণয়ন ও সংস্কার করার কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশে ও ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস’ পালন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত। দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী অভিবাসী কর্মী তাদের পরিবারের সদস্যসহ অভিবাসন প্রক্রিয়া ও অভিবাসী কল্যাণের সাথে সম্পৃক্ত সকল ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, মহান বিজয় দিবসের এই মাহেন্দ্রক্ষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত, আত্মপ্রত্যয়ী ও আত্মমর্যাদাশীল ‘সোনার বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে বৈদেশিক কর্মসংস্থানে আমাদের অঙ্গীকারকে সামনে রেখে ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ২০২২’র প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘থাকব ভালো, রাখব ভালো দেশ- বৈধ পথে প্রবাসী আয়-গড়ব বাংলাদেশ’। তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, প্রবাসীদের কল্যাণ সাধন এবং দেশের রেমিটেন্স বৃদ্ধিতে আমাদের প্রচেষ্টা ও প্রত্যাশা পূরণ করতে এই প্রতিপাদ্য অর্থবহ ভূমিকা পালন করবে।
মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন , দেশে প্রতিবছর আনুমানিক ২০ থেকে ২৫ লাখ কর্মী শ্রমবাজারে নতুন করে যুক্ত হচ্ছে। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রতিবছর প্রায় ৭ থেকে ৮ লাখ লোক বৈদেশিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন দেশে গমন করে। বিএমইটি’র পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২১ সালে ৬ লাখ ১৭ হাজার ২০৯ জন নারী-পুরুষ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে গেছেন। একই সাথে প্রবাসীদের পাঠানো ২২ লাখ ৭ হাজার ৮৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদেশ প্রত্যাগত প্রবাসী কর্মীদের এবং প্রবাসে করোনায় মৃত কর্মীর পরিবারের সদস্যদের প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে সহজ শর্তে দুইশ’ কোটি টাকার ‘বিনিয়োগ ঋণ’ প্রদান করা হয়েছে। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তহবিল থেকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে মাত্র ৪ শতাংশ সরল সুদে ও সহজ শর্তে এ ঋণ প্রদান কার্যক্রম চলমান। এর আওতায় গত ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৬ হাজার ৮০৩ জন ঋণগ্রহীতাকে ১৮০ কোটি ৯৩ লাখ টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে।
সচিব জানান, সম্প্রতি মালয়েশিয়া শ্রমবাজার চালু হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যেই ১ লাখ ১৫ হাজার ৫৪১ জনের নিয়োগ অনুমতি প্রদান সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও কর্মী প্রেরণ বিষয়ে গ্রিসের সাথে বাংলাদেশের একটি আগ্রহপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। আলবেনিয়া, মাল্টা ও বসনিয়ার সাথেও কর্মী প্রেরণ বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়াও, বর্তমানে নতুন শ্রমবাজার হিসেবে কম্বোডিয়া, উজবেকিস্তান, পোল্যান্ড, হাঙ্গেরি, রোমানিয়াসহ আফ্রিকা মহাদেশের কয়েকটি দেশ এবং জাপান, চীন, ক্রোয়েশিয়া, সেনেগাল, বুরুন্ডি, সিশেলস এ কর্মী পাঠানো শুরু হয়েছে।
তিনি জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরের নভেম্বর মাস পর্যন্ত ৫ মাসে ৪ লাখ ১২ হাজার ২৭০ জনের বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। কর্মী যাওয়ার এই ধারা অব্যাহত থাকলে এ অর্থ বছরে ৯ থেকে ১০ লাখ লোকের বিদেশে কর্মসংস্থান হবে।
comment / reply_from
related_post
Popular Posts
newsletter
newsletter_description