
আখাউড়ায় মোগড়া গ্রামে শ্মশাণে লাশ নিয়ে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ, পুলিশ এসে খুলে দিল রাস্তা
আফজল খান শিমুল ( বিশেষ প্রতিনিধি ):
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া গ্রামে শ্মশাণে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ থাকায় তিনঘন্টা পর্যন্ত এক সনাতন ধর্মালম্বীর লাশ পড়ে থাকে। রাস্তা নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। পরে একপক্ষের টিনের বেড়া খুলে লাশ শ্মশাণে নেওয়া হয়। তবে রাস্তা নিয়ে কোনো সুরাহা হয়নি। এ নিয়ে হিন্দু সম্প্র দায়ের মাঝে গভীর ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। রবিবার গভীর রাতে মোগড়া সুধীর পাল নামে এক ব্যক্তি মারা গেলে লাশ নিয়ে আসার পর রাস্তা বন্ধ দেখতে পেয়ে লোকজন অপেক্ষা করতে থাকে। সকাল আটটা থেকে লোকজন লাশ নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। খবর পেয়ে উপজেলা পুজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে আসেন। উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হলে ছুটে আসে থানা পুলিশ। হিন্দু স্থানীয়রা জানান, বাপ দাদা চৌদ্দগুষ্টির লাশ এই শ্মশানে দাহ করা হয়েছে আজ সেই শ্মশানের রাস্তা বন্ধ। হিন্দু সুধীর পাল মারা গেলে সকাল ৮ টার দিকে লাশ নিয়ে কালী তলা শ্মশাণে যান।
এ সময় দেখতে পান শ্মশাণে যাওয়ার রাস্তাটি একদিকে টিনের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আরেকদিক অন্য পক্ষ দখল করে রেখেছে। যে কারণে রাস্তা বন্ধ, রাস্তা বন্ধ থাকায় শ্মশাণে যাওয়াসহ আরো ২৫টি পরিবার সমস্যায় আছেন।তারা জানান, জায়গা নিয়ে আলমগীর ও শামীম নামে দুই ব্যক্তির মধ্যে বিরোধ চলমান। তারা শ্মশাণে যাওয়ার রাস্তা দখল করে নেন। শামীম শ্মশাণে যাওয়ার রাস্তায় বেড়া দিয়ে দেন। অন্যদিকে আলমগীর ঘর তুলে রাখাসহ গাছ লাগিয়ে জায়গা দখলে রাখেন। উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ, ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে শামীম বেড়া সরিয়ে নেন। বিষয়টি মীমাংসা না হওয়া পর্যন্ত বেড়া না দিতে বলা হলেও তিনি সেটা মানেননি। অন্যদিকে রায় অনুযায়ি আলমগীরকে রাস্তার জন্য জায়গা ছাড়তে বলা হয়। তিনিও সেটা না করে জায়গা দখলে রাখেন ও আদালতে মামলা করে দেন। সোমবার ওই রাস্তা দিয়ে লাশ নিতে না পারলে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। অনেক আলাপ আলোচনার পর শামীমের পক্ষ বেড়া খুলে দিলে তার বাড়ির উপর দিয়ে লাশ নেওয়া হয়। রাস্তা ঘেষে আলমগীরের গাছ থাকায় ও রাস্তায় গর্ত থাকার সেখান দিয়ে লাশ নেওয়া যায়নি।
শিউলী আক্তার নামে এক নারী জানান, সকাল থেকে লাশ নিয়ে বসে থাকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। এরপর পুলিশ ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এসে পরিস্থতি স্বাভাবিক করেন। রাস্তা বন্ধ থাকায় আমাদের মতো ২৫টি পরিবার বন্দি অবস্থায় আছে বলে জানান তিনি।মোগড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন জানান, আমরা সালিসের রায় দিয়েছি। আলমগীরের পক্ষ রায় মানেনি। লাশ নিয়ে বসে থাকার কথা আমাকে জানানো হলে আমি শামীমকে বলি বেড়া খুলে দিতে। বিষয়টি সাময়িক মীমাংসা করা হয়েছে। আখাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। বেড়া খুলে লাশ নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আপাতত সেখানে কোনো সমস্যা নেই।
comment / reply_from
related_post
Popular Posts
newsletter
newsletter_description