অনেক শীর্ষ নেতার পরিবার ও পূর্বপুরুষরা রাজাকার ছিলেন: শিক্ষামন্ত্রী

স্বাধীনতার পরেও কেন স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ থাকবে বলে প্রশ্ন করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি (ডা. দীপু মনি) বলেছেন, ‘বিরোধী দলের একটি অংশ স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি। তাদের অনেকেই এখনো স্বাধীনতাকে গণ্ডগোল বলেন। সে দলের অনেক শীর্ষ নেতার পরিবার ও তাদের পূর্বপুরুষরা রাজাকার ছিলেন।’
আজ ৯ নভেম্বর বুধবার দুপুর ১২টায় জাতীয় জাদুঘরে কবি সুফিয়া কামাল অডিটরিয়ামে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ফাউন্ডেশনের ‘৭১-এ গণহত্যার জাতিসংঘের স্বীকৃতি চাই’ শীর্ষক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যেকালে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় ডা. দীপু মনি বলেন, ‘এ দেশে দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থেকেছেন, তারা বলেন রাজনীতি করেন। রাজনীতি দেশ এবং মানুষ সেবার কাজ। মুখে রাজনীতি বললেও এ দেশের শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ঔদ্ধত্য দেখান।’
স্বাধীনতার বিপরীত শক্তি মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের সাথে নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘শহীদের রক্তে অর্জিত পতাকা তাদের গাড়িতে তুলে দেন যারা, কেন তারা এ দেশের রাজনীতিতে থাকবেন? স্বাধীনতার পরেও কেন স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ থাকবে? সব দলকেই স্বাধীনতার পক্ষেই থাকতে হবে।’
গণহত্যার স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে তিনি (ডা. দীপু মনি) বলেন, ‘পৃথিবীতে যত গণহত্যার সংজ্ঞা রয়েছে, তার সবগুলোই বাংলাদেশের গণহত্যার সঙ্গে মিলে যায়। ফলে এটি নিয়ে দ্বিমত করার কোনো জায়গা নেই। বাংলাদেশে এত অল্প সময়ের যুদ্ধে যত প্রাণ দিতে হয়েছে, পৃথিবীর কোথাও এত প্রাণ দিতে হয়নি। বিভিন্ন দেশের জাদুঘরগুলোতে এ বিষয়ে অনেক তথ্য আছে, আবার ভুল তথ্যও আছে।’
গণহত্যার ইতিহাস বিশ্বকে জানানো দরকার উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অর্জন কত ত্যাগের বিনিময়ে শুধু তা জানাতে নয়, বরং বিশ্বের ইতিহাসে এমন ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সে কারণে জানাতে হবে। ’
ডা. দীপু মনি দাবি জানিয়ে আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ভাষণ যতবার বাজানো হয়েছে, এর জন্য যত প্রাণ দিতে হয়েছে। পৃথিবীর অন্য কোনো ভাষণ এতবার বাজানো হয়নি, আবার এত প্রাণও দিতে হয়নি। সেই ভাষণ, বঙ্গবন্ধু ও জয় বাংলা নিষিদ্ধ করা হয়েছিলো। এছাড়াও দেশকে নব্য পাকিস্তান বানানোর চেষ্টা হয়েছিল। সেই অপশক্তি এখনো সক্রিয়, তারা আরও একটি ৭৫-এর মতো ঘটনা ঘটাতে চায়।’
শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘পাকিস্তানের কাছে দাবি জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে, যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ও আটকে পড়া পাকিস্তানি নাগরিকদের নিয়ে যেতে। তবে এখন সকলেই দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে নিয়েছে। আজকের দিনে কে আর বাংলাদেশ ছেড়ে যেতে চাইবে? সে দেশের লোকেরা সারাক্ষণ বলতে থাকে আমাদের বাংলাদেশ বানিয়ে দাও।’
এ সংগঠনের আহ্বায়ক বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘১৯৫২ ও ১৯৫৪ এবং ১৯৬৪ সালসহ বারবার হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে পাকিস্তান। তারা বঙ্গবন্ধুকেও হত্যা করতে চেয়েছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিয়ের আগের রাতে দুই থেকে আড়াই হাজার মুরগি জবাই করি। তার বিভিন্ন অংশ ছড়িয়ে থাকে। ১৬ আগস্ট তারা মানুষদের এভাবেই মেরেছে। অনেকের নাক ছিল না, কারোও মুখ ছিল না।’
অনুষ্ঠিত এ সভায় মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত ডকুমেন্টরি প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. মো. শহীদুল্লাহ সিকদার মূল প্রবন্ধ পাঠসহ স্বাধীনতাযুদ্ধের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ভারতের পত্রিকা দ্য ওয়ালের নির্বাহী সম্পাদক আমল সরকার। তিনি যুদ্ধ সময়কালীন এবং সমসাময়িক সময়ে বাংলাদেশ ও ভারতের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তুলে ধরেন।
comment / reply_from
related_post
Popular Posts
newsletter
newsletter_description