মোঃ ইমরান ইসলাম, নিয়ামতপুর(নওগাঁ)প্রতিনিধিঃ নওগাঁর নিয়ামতপুরে মাঘের বৃষ্টির কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছেন আলু ও ধান চাষীরা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে শুক্রবার সকাল থেকে দিনভর বৃষ্টির ফলে বিপাকে পড়েছেন প্রান্তিক চাষীরা।
এখনও যারা ক্ষেত থেকে আলু তুলতে পারে নি, তারা ক্ষেতের আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। সদ্য রোপনকৃত নিচু এলাকার বোরো ধানের চারা পানির নিতে তলীয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে যারা রবিশস্য সরিষা,ক্ষীরা, রসুন, পিঁয়াজ, মরিচ, শিম,বরবটি,করলা, টমেটো,চিচিঙ্গাসহ বিভিন্ন ফসল জমিতে পড়ে রয়েছে সেগুলো ফসলের ক্ষতির আশঙ্কা করছে চাষীরা। এদিকে বাজারে আলুর দাম না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন অনেকেই।এবছর কৃষকরা আর কিছুদিনের মধ্যে আলু ঘরে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ঠিক তখনই বৃষ্টি হানা দেয়। বৃষ্টিতে ফসলি মাঠে বিশেষ করে আলুর জমিতে ও নিচু ধানের জমি পানিতে তলিয়ে গেছে।

শনিবার সরজমিনে বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কৃষকরা কোথাও জমির পানি অপসারণ করছেন। এ চিত্র ছিল সর্বত্র। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় আগাম আলুর বাম্পার ফলনও হয়েছিল। কিন্তু বৃষ্টি তাদের সর্বনাশ ডেকে আনল।আলু চাষী ইব্রাহিম হোসেন বলেন, আবহাওয়ার কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। দুই সপ্তাহ আগেও কি প্রচণ্ড শীত। আবহাওয়ার এই লুকোচুরি খেলায় আলু ক্ষেত নিয়ে আমরা ভীষণ দুশ্চিন্তায় আছি।
সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বৃষ্টিতে আলু ক্ষেতে পানি আটকে গিয়েছে। মূষলধারে বৃষ্টির ফলে মাটি সরে গিয়ে আলু বের হয়ে গিয়েছে। বাজারে তো আলুর দামই নেই। আলু ক্ষেত নিয়ে শঙ্কায় আছি আমরা।
সরিষা চাষী রানা জানান, আমি এবার ২ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। সরিষা মাঠে লাল হয়ে গিয়েছে। বৃষ্টি না হল দু-এক দিনের মধ্যে ক্ষেত থেকে সরিষা তোলা হতো। এখন রোদ উঠলে পাঁকা সরিষার দানা গুলো মাটিতে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি ।বোরো ধান চাষী ইমরান হোসেন জানান, আমি ২ বিঘা নিচু জমিতে বোরো ধান চাষ করেছিলাম। ধান গাছের চারাগুলো খুব ভালো হয়েছিল।
কিন্তু মাঘের বৃষ্টিতে আমার রোপনকৃত চারাগুলো পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছে।উপজেলা কৃষি অফিসার আমীর আব্দুল্লাহ ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, শুক্রবার সকাল থেমে থেমে দিনভর বৃষ্টি হয়েছে। এতে করে মাঠে যেসব টমেটো ও আলু জাতের ফসল রয়েছে সেগুলোতে ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে। তবে আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি যাতে বৃষ্টির পরপরই রোদ উঠলে ছত্রাকনাশক স্প্রে করা হয়। তাতে করে এধরনের সমস্যা হবে না। তিনি আরোও বলেন, বৃষ্টির কারণে কিছু নিচু এলাকার বোরো ধানের চারাগুলো পানির নীচে তলিয়ে গিয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে পানি অপসারণ হলে সেগুলো চারা গাছগুলোর সমস্যা হবে না।