যান্ত্রিক শহরে
এখন মাঝরাত পেরিয়ে গেছে…
চোখে স্বপ্নীল সুখের ছোঁয়া
আর একবুক যন্ত্রণা নিয়ে
আমি এক নগরবাউল
জেগে আছি বড় একা।
-নগরবাউল জেমস
তুমুল জনপ্রিয় নগরবাউল গানটি যিনি গেয়েছেন তার নাম ফারুক মাহফুজ আনাম। আবার তিনিই গেয়েছেন, আমি এখনও গান গাই, এলোমেলো সেই ঝাঁকড়া চুলে। একটু খটকা লাগছে কি? যারা এই নামের সঙ্গে পরিচিত নন তাদের মনে খটকা লাগলেও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত জীবন্ত কিংবদন্তী এই ব্যান্ড সংগীত তারকার ভক্তরা ঠিকই ধরে ফেলেছেন যে তিনি আর কেউ নন, তিনি হলেন আমাদের চির পরিচিত এলোমেলো ঝাঁকড়া চুলের নগরবাউল জেমস। ভালোবেসে সবাই গুরু বলে ডাকেন উপমহাদেশের তুমুল জনপ্রিয় এই রকস্টারকে। কেবল বাংলাদেশেই নয়, কলকাতা, মুম্বাইসহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে আছে জেমসের অগণিত ভক্ত।
পুরো নাম ফারুক মাহফুজ আনাম হলেও জেমস নামেই শ্রোতাদের কাছে সর্বাধিক পরিচিত তিনি। বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের ইতিহাসে এক জীবন্ত কিংবদন্তির নাম নগরবাউল জেমস। সুরের যাত্রায় দীর্ঘ পথচলায় শ্রোতাদের হৃদয়ে স্থায়ী আসন গেড়েছেন তিনি। বাবার চাকরিসূত্রে বাংলাদেশের বিভিন্ন মফস্বল বা জেলা শহরগুলোতে থাকতে হয়েছে তাকে। পরিবর্তন করতে হয়েছে অনেক স্কুল, অনেক কলেজ। ক্লাস সেভেন থেকে গিটার নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু তার। আর ব্যান্ডদল শুরু করেন আশির দশকের শুরুর দিকে। তখন বিভিন্ন ক্লাবে গান করতেন তিনি। ১৯৮৬-৮৭ সালের দিকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা আসেন এবং স্টেশন রোড অ্যালবামটি বের করেন। এভাবেই শুরু হয় সুরের জগতে তার পথচলা।
পড়ালেখার চেয়ে গানের প্রতিই ছিল জেমসের বেশি ঝোঁক। বিষয়টি তার বাবা মোজাম্মেল হক মোটেও ভালো চোখে দেখতেন না। গানের জন্য কৈশোরেই পড়ালেখার পাট চুকিয়ে ঘর ছাড়তে হয়েছিল জেমসকে। তার বাবা চট্টগ্রাম কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান এবং সেকেন্ডারি হায়ার এডুকেশনের ডিরেক্টর জেনারেল পদে দায়িত্ব পান। চাকরিসূত্রে তিনি ঢাকায় চলে আসেন, কিন্তু জেমস চট্টগ্রামেই রয়ে যান। পরবর্তী সময়ে জেমস যে সাফল্য অর্জন করেন তার কিছুই দেখে যেতে পারেননি তার বাবা-মা।
আশির দশক থেকে গান শুরু করলেও জেমস ব্যাপকভাবে পরিচিতি বা জনপ্রিয়তা পান নব্বইয়ের দশকে। তরুণ প্রজন্মের কাছে ক্রেজে পরিণত হন তিনি। তাকে ঘিরে রীতিমতো জেমস উন্মাদনা শুরু হয়ে যায় তার ভক্তদের মধ্যে। অথচ তারকা হওয়ার জন্য কখনোই গান করেননি জেমস। তারকা হবেন এমনটা আশাও করেননি। বাবা ঢাকায় চলে এলেও জেমস রয়ে যান প্রিয় শহরটিতেই। চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে পাঠানটুলীর আজিজ বোর্ডিংয়ে শুরু হয় তার স্ট্রাগল লাইফ। আজিজ বোর্ডিংয়ের বারো ফুট বাই বারো ফুট দৈর্ঘ্যের ছোট্ট একটি ঘরের ভেতর ছিল একটা ক্যাসেট প্লেয়ার আর অনেক অনেক ক্যাসেট। ছোট্ট ওই ঘরের ভেতরে বসে কিংবা শুয়ে গান তোলা হতো। সামনে ছিল ছোট্ট একটা রেস্টুরেন্ট, সেখানেই খাওয়া-দাওয়া করতেন জেমস। সন্ধ্যায় চলে যেতেন আগ্রাবাদ হোটেলে। সেখানে নাইট ক্লাবে শো করতেন। শুরুতে ইংরেজি কভার মিউজিক করতেন, বাজাতেন বিভিন্ন নাইট ক্লাবে। গানের টানে, প্রাণের টানে ঠাঁই হওয়া আজিজ বোর্ডিংয়ে গান, আড্ডা আর যাই হোক না কেন জেমসের সব ওখানেই হয়েছে। আজিজ বোর্ডিংয়ের দিনগুলো কখনও ভুলতে পারবেন না তিনি।
আজিজ বোর্ডিংয়ের স্ট্রাগল লাইফ নিয়ে আমি তোমাদেরই লোক অ্যালবামে আজিজ বোর্ডিং শিরোনামে একটি গান গেয়েছেন জেমস। গানের শুরুতে স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেন, “সেই আশির দশকের মাঝামাঝির কথা। গানের টানে, প্রাণের টানে আমি চট্টগ্রামে। ঠাঁই হলো আজিজ বোর্ডিংয়ে। গান বাঁধি, গান করি আর স্বপ্ন দেখি। সেই স্মৃতিময় আজিজ বোর্ডিং স্মরণে এই গান।” গানটির কথা অনেকটা এরকম:
“ছোট্ট একটি ঘর
ছোট্ট একটি খাট
ছোট্ট একটি টেবিল
একটি পানির জগ।
ছিল এক চিলতে
আকাশ আমার
আর সেই প্রিয় গিটার
রুম নাম্বার ছত্রিশে
ছিল আমার বসবাস।
প্রিয় আজিজ বোর্ডিং…
ছিল ব্যাচেলর সংসার আমার
ছিল অগোছাল জীবন আমার
রাত করে ঘরে ফেরার
বাউন্ডুলে দিনভর।
কত স্বপ্নের পায়রা ছুঁয়ে গেছে মন
শত স্মৃতির কিংখাবে
বন্দী সেদিন এখন।
ছিল গান আর গিটার আমার
ছিল স্ট্রাগল লাইফ আমার
ব্যান্ডের বন্ধুরা মিলে গীত রচনা
সেই নাইট ক্লাবে জিম মরিসন
বাজাতাম ডিলান বব মার্লে।…”
১৯৮৬ সালের দিকে প্রিয় চট্টগ্রাম ছেড়ে ঢাকায় এসে নিজস্ব সৃষ্টিশীল কাজে মেতে ওঠেন জেমস। তখন মোটেও ভাবেননি বড় একজন তারকা বনে যাবেন তিনি। কেবলই গান করার জন্য গান করতেন, নিজের ভালোলাগার জন্য গান সৃষ্টি করার চেষ্টা করতেন। এভাবে সম্পূর্ণ স্বকীয় ধারার গান স্বকীয় ঢংয়ে স্বকীয় কণ্ঠে শ্রোতাদের উপহার দিয়ে বিমোহিত করতে থাকেন জেমস। তবে তার ভিন্নধারার গান বা গায়কী সচেতনভাবে হয়নি বলেই মনে করেন জেমস। অতীতের সংগ্রামী জীবন, বাবার চাকরিসূত্রে নানা জায়গায় ঘোড়াঘুড়ি আর ভেতরের অনুভূতিগুলোই গানে গানে বিমূর্ত হয়ে ওঠে জেমসের দরাজ কণ্ঠে।
বলিউডে প্লেব্যাক তার সংগীত জীবনে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে বলেই মনে করেন জেমস। এর মধ্য দিয়ে সম্পূর্ণ নতুন এক অভিজ্ঞতা সঞ্চিত হয়েছে তার ভেতর। তিনি এমন এক ভাষায় গান গেয়ে সাফল্য পেয়েছেন যে ভাষা তিনি নিজে ঠিকমতো বলতেও পারেন না। সবমিলিয়ে বলিউড মিশন একটা অ্যাডভেঞ্চারের মতো ছিল জেমসের কাছে।
খুব বেশি ভেবেচিন্তে কাজ করার মতাদর্শে বিশ্বাসী নন জেমস। কোনো একটি গান নিজের কাছে ভালো লাগলে বা পছন্দ হলে বা তৃপ্তিবোধ করলে আগপিছ চিন্তা না করে গেয়ে ফেলেন তিনি। গান গাওয়ার পরে সব দায়িত্ব তিনি তুলে দেন শ্রোতাদের কাঁধে। শ্রোতারা গান শোনেন, প্রতিক্রিয়া দেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শ্রোতাদের ভালোবাসায় সিক্ত হন জেমস। তার ভক্তরা শুধু গান শুনেই ক্ষান্ত হন না, গুরুকে অন্ধের মতো অনুসরণও করেন। গুরুর মতো ঝাঁকড়া বড় বড় চুল রাখেন, হাতা গুটিয়ে পাঞ্জাবি পড়েন, পা গুটিয়ে জিন্স প্যান্ট পরেন, গলায় চাদর ঝুলান। ভক্তদের এই ভালোবাসাই হলো জেমসের সৃষ্টিশীলতার অনুপ্রেরণা। ভক্তদের এই অকৃত্রিম প্রেম জেমসকে অনুপ্রাণিত করে নতুন কিছু সৃষ্টি করার জন্য, শক্তি জোগায় পরবর্তী কাজের।
নিজেকে পুরোদস্তুর গানের মানুষ বলে মানেন জেমস। তার জীবনের অপরিহার্য অংশ গানের চর্চা। প্রাত্যহিক জীবনে অাহার-নিদ্রার মতোই তার কাছে সমান গুরুত্বপূর্ণ গানের চর্চা। ব্যক্তি জেমসের পাশাপাশি তার অনেক সৃষ্টিই কালের সীমারেখা অতিক্রম করেছে। জীবন্ত এই কিংবদন্তীর অনেক গানই অমর হয়ে থাকবে ইতিহাসের পাতায়। ইতোমধ্যেই সংগীত ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা হয়ে গেছে এই জাত শিল্পীর নাম। বর্তমান প্রজন্মের মতো ভবিষ্যৎ প্রজন্মও নিশ্চয়ই বিমোহিত হবে জেমসের অসাধারণ গায়কী, বাণী ও সুরনির্ভর গান শুনে। জেমস মনে করেন, কালজয়ী হওয়া ভীষণ কঠিন। জীবনে অর্জিত সাফল্য ও প্রাপ্তি নিয়ে মোটেও মাথা ঘামান না তিনি। তার সকল ভাবনা ভবিষ্যৎকে ঘিরে। গানের মাধ্যমেই অগণিত মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন জেমস। মানুষের হৃদয় জমিনে প্রবেশের এই একটি পথই তার নখদর্পণে। তাই গান দিয়ে কীভাবে মানুষের হৃদমাঝারে বসবাস করবেন সেই ভাবনাতেই সর্বদা ডুবে থাকেন গানের এই নিপুণ কারিগর।
বাংলাদেশে হার্ড রক ঘরানার গানের বিকাশ ও জনপ্রিয়তার পেছনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন জেমস। শুধু তাই নয়, বাংলা ভাষায় তার হাত ধরেই প্রথম সাইকাডেলিক রক গানের যাত্রা শুরু হয়। বাংলাদেশে সাইকাডেলিক রকের প্রবর্তক হিসেবে বিবেচিত তিনি।
জেমসের জন্ম ১৯৬৪ সালের ২ অক্টোবর, উত্তরবঙ্গের নওগাঁ জেলায়। তার বাবা মোজাম্মেল হক ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা। বাবার চাকরিসূত্রে জেমস শৈশবে ঘুরে বেড়িয়েছেন নানা জেলা ও মফস্বল শহরে। বাবার চাকরির সুবাদে একটা সময়ে চট্টগ্রামের মাটিতে পা রাখেন জেমস। তার বাবা চট্টগ্রাম কলেজের প্রিন্সিপাল মোজাম্মেল হক চেয়েছিলেন ছেলে লেখাপড়া শিখে অনেক বড় মানুষ হবে। কিন্তু ছেলের মাথায় তখন গানের পোকা। লেখাপড়ায় মন নেই, সারাদিন শুধু গান আর গান! পরিবারের কেউই গান-বাজনার সঙ্গে যুক্ত নয়। জেমসের গান-বাজনার বিষয়টিকে মেনে নিতে পারেননি তার বাবা। এক পর্যায়ে গানের টানে বাড়ি ছাড়েন জেমস। শুরু হয় তার সংগ্রামী জীবন।
আশির দশকের প্রারম্ভে চট্টগ্রামে জেমসের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে ব্যান্ডদল ফিলিংস। তখন জেমসের সঙ্গে ব্যান্ডটির লাইনআপে ছিলেন প্যাবলো (ভোকাল ও পিয়ানো), ফান্টি (ড্রামস) ও স্বপন (বেজ গিটার)। শুরুর দিকে জিম মরিসন, বব মার্লে, এরিক ক্ল্যাপটনের মতো বিখ্যাত শিল্পীদের ইংরেজি গান কভার করত ফিলিংস। স্বপন ও পাবলো ফিলিংস ছেড়ে দেয়ার পর আশির দশকের মাঝামাঝিতে ফান্টিকে নিয়ে জেমস ঢাকায় চলে আসেন। ফিলিংস ব্যান্ডে যোগ দেন বেজ গিটারিস্ট বাবু ও কীবোর্ডবাদক তানভীর। ১৯৮৭ সালে ফিলিংসের প্রথম অ্যালবাম স্টেশন রোড মুক্তি পায়। অ্যালবামের ৫টি গান জেমস নিজেই লেখেন। সুর বসান বিখ্যাত বিভিন্ন ইংরেজি গান থেকে। ব্যবসায়িকভাবে খুব বেশি সাফল্য না পেলেও অ্যালবামের কয়েকটি গান বেশ আলোচিত হয়। পরের বছর একক অ্যালবাম অনন্যা নিয়ে হাজির হন জেমস। অ্যালবামটি সুপারহিট হয়। দুই বছর বিরতি দিয়ে ১৯৯০ সালে জেল থেকে বলছি অ্যালবাম উপহার দিয়ে হইচই ফেলে দেয় ফিলিংস।
১৯৯১ সালের নভেম্বরে জেমস ভালোবেসে বিয়ে করেন আনন্দ বিচিত্রা ফটোসুন্দরী প্রতিযোগিতা থেকে উঠে আসা অবুঝ মনখ্যাত মডেল ও চিত্রনায়িকা রথিকে। তাদের সংসার টেকেছিল প্রায় ১০ বছর। পরবর্তী সময়ে জেমস বিয়ে করেন বেনজির সাজ্জাদকে। একটি কনসার্টে তাদের প্রথম পরিচয় হয়েছিল। পরিচয় থেকে প্রেম এবং প্রেম থেকে বিয়ে। ২০০২ সালে বেনজিরকে বিয়ে করে জেলও খাটতে হয়েছিল জেমসকে। তিন সন্তানের জনক এই রক লিজেন্ড। ছেলে দানেশ এবং দুই মেয়ে জান্নাত ও জাহান।
১৯৯৬ সালে নগরবাউল, ১৯৯৮ সালে লেইস ফিতা লেইস ও ১৯৯৯ সালে কালেকশন অব ফিলিংস অ্যালবাম প্রকাশ করে ফিলিংস। পরবর্তী সময়ে ফিলিংস ব্যান্ডের নাম পরিবর্তন করে নগরবাউল রাখেন জেমস। এই ব্যান্ডের দুটি অ্যালবাম দুষ্টু ছেলের দল এবং বিজলি। ব্যান্ডের পাশাপাশি আটটি একক অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন জেমস। সেগুলো হলো: অনন্যা (১৯৮৮), পালাবি কোথায় (১৯৯৫), দুঃখিনী দুঃখ করোনা (১৯৯৭), ঠিক আছে বন্ধু (১৯৯৯), আমি তোমাদেরই লোক (২০০৩), জনতা এক্সপ্রেস (২০০৫), তুফান (২০০৬) এবং কাল যমুনা (২০০৮)।
চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েও দারুণ সাফল্য পেয়েছেন জেমস। স্বীকৃতি মিলেছে জাতীয় পর্যায়েও। দুবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন তিনি। ২০১৪ সালে দেশা- দ্য লিডার ছবির দেশা আসছে এবং ২০১৭ সালে সত্ত্বা ছবির তোর প্রেমেতে অন্ধ গানে অনবদ্য কণ্ঠ দিয়ে জাতীয়ভাবে পুরস্কৃত হন তিনি। এছাড়া মনের সাথে যুদ্ধ ছবির আসবার কালে আসলাম একা, মাটির ঠিকানা ছবির মাটির ঠিকানা, ওয়ার্নিং ছবির এত কষ্ট কষ্ট লাগে, সুইটহার্ট ছবির বিধাতা, ললটিপ ছবির ভোলা মনরে এবং জিরো ডিগ্রি ছবির প্রেম ও ঘৃণা গানে কণ্ঠ দিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন জেমস।
হিন্দি চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছেন জেমস। ব্যান্ড তারকা হিসেবে পশ্চিমবঙ্গেও দারুণ জনপ্রিয় তিনি। ২০০৪ সালে বাঙালি বংশোদ্ভূত বলিউডের বিখ্যাত সংগীত পরিচালক প্রীতম চক্রবর্তীর সঙ্গে জেমসের সাক্ষাৎ হয়। পরের বছর প্রীতমের সংগীত পরিচালনায় বলিউডের গ্যাংস্টার ছবিতে প্লেব্যাক করেন জেমস। তার কণ্ঠে ভিগি ভিগি গানটি তুমুল জনপ্রিয় হয়। ওই সাফলে্যর সুবাদে পরের দুবছরে ও লামহে ছবির চল চলে এবং লাইফ ইন এ মেট্রো ছবির রিশতে ও আলবিদা (রিপ্রাইস) গানে কণ্ঠ দেন জেমস। এরপর তিনি ২০১৩ সালে ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তিতে নির্মিত ওয়ার্নিং ছবিতে বলিউডের জনপ্রিয় সংগীত পরিচালকত্রয়ী মিট ব্রোস অঞ্জনসের সংগীত পরিচালনায় বেবাসি গানে কণ্ঠ দেন।
বলাই বাহুল্য, জেমসের গাওয়া প্রতিটি হিন্দি গানই পেয়েছে আকাশছোঁয়া সাফল্য। তার যাদুকরী ভরাট কণ্ঠে গাওয়া অদ্ভূত মায়াবী সুরের গানগুলো শুনে রীতিমতে মুগ্ধ হন বিটাউনের বাসিন্দারা। লাইফ ইন এ মেট্রো ছবির রিশতে গানে কণ্ঠ দেয়ার পাশাপাশি গানটির চিত্রায়নেও অংশ নেন জেমস। নিজের গানের সঙ্গেই ঠোঁট মেলাতে দেখা যায় তাকে। ওয়ার্নিং ছবির বেবাসি গানের ভিডিওতেও ব্যান্ড তারকা চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গেছে তাকে।
সফল গায়ক, গীতিকার, সুরকার, গিটারবাদক ও ব্যবসায়ী জেমস সফল একজন আলোকচিত্রী হিসেবেও নিজেকে প্রমাণ করেছেন। মডেল ফটোগ্রাফিতে ভিন্নতা যুক্ত করেছেন তিনি। তার ক্যামেরায় তোলা দুই বাংলার জনপ্রিয় নায়িকা জয়া আহসান ও রাফিয়াত রশীদ মিথিলার ছবি ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে বিভিন্ন মহলে। মডেল ফটোগ্রাফি ছাড়াও জেমস তার ক্যামেরায় সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে তুলে ধরেছেন প্রকৃতি ও নাগরিক জীবনকে। নিতান্তই শখের বসে তোলা প্রাণবন্ত এসব আলোকচিত্র দেখে মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। দেশে বা দেশের বাইরে যেখানেই যান তিনি সঙ্গে নেন ক্যামেরা। ল্যান্ডস্কেপ তার ভীষণ পছন্দ। সাগরের ঢেউয়ের ছবি থেকে শুরু করে পানিতে যান্ত্রিক শহরের প্রতিচ্ছবি, সূর্যাস্ত, ফুল, পাহাড়, বরফঘেরা পর্বতসহ আরও নানা নৈসর্গিক দৃশ্য ভিন্নদৃষ্টিতে ক্যামেরাবন্দী করেছেন তিনি। হরহামেশাই এসব ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে ভক্তদের চমকে দেন তিনি।
জেমসের গানের বিষয়বৈচিত্র্য চোখে পড়ার মতো। এমন সব বিষয় নিয়ে তিনি গান বেঁধেছেন যা রীতিমতো সাধারণ মানুষের ধারণার বাইরে। রাখে আল্লাহ মারে কে বা জিকিরের মতো আধ্যাত্মিক গান থেকে শুরু করে গ্রাম বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্য যাত্রাপালা, হাউজি, বায়োস্কোপ, হাডুডু খেলা, জেল থেকে বলা ফাঁসির আসামীর মৃত্যুপূর্ব অনুভূতি, পোশাক শ্রমিকদের নিয়ে সেলাই দিদিমনি, মলম বিক্রেতা মন্নান মিয়া, সর্বহারা জুয়াড়ি, পেশাদার খুনী, স্টেশন রোডের যৌনকর্মী জরিনা বিবি, রাজ দরবারের নর্তকী মীরা বাই, হেরেমের বন্দিনী, রিকশাওয়ালা, শারাবি, রংবাজ, নাযায়েজ সন্তান, গ্রামীণ নারী হারাগাছের নূরজাহান, সর্পরাজ, লেইস ফিতা ওয়ালা, দুঃখওয়ালা, লাঠিয়াল, ডাকপিয়ন, পাপী, বহুরুপীর মতো গান উপহার দিয়ে নানা বয়সী আর শ্রেণী-পেশার শ্রোতাদের হৃদয় জয় করেছেন জেমস।
জেমস তার গানের মধ্য দিয়ে অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন:
“আমাদের ধর্ম আমাদের কাছে
তোমাদের ধর্ম তোমাদের কাছে।।
যার যার ধর্ম তার তার কাছে
যার যার ভাষা তার তার দেশ
কেউ কেউ যায় মসজিদে
কেউ কেউ যায় মন্দিরে
প্রার্থণারত কেউ প্যাগোডায় গির্জাতে
শোন শোন ওই ওঠে রব
সকল মাতৃভাষাতে
একটি চিঠি হচ্ছে বিলি
ভাষাই ধর্ম, ভাষাই দেশ।”
গানে গানে দুখী ও হতাশ মানুষদের জেগে ওঠার আহ্বান জানিয়েছেন জেমস। তাদের অন্ধকার ছেড়ে আলোকিত হতে বলেছেন। গানে গানে জেমসের উদাত্ত আহ্বান:
“চেয়ে দেখ উঠেছে নতুন সূর্য
পথে পথে রাজপথে
চেয়ে দেখ রংয়ের খেলা
ঘরে বসে থেকে লাভ কী বলো
এসো চুল খুলে পথে নামি,
এসো উল্লাস করি
দুঃখিনী দুঃখ করো না।
আঁধারের সিঁদ কেটে আলোতে এসো
চোখের বোরখা নামিয়ে দেখো জোছনার গালিচা
ঘর ছেড়ে তুমি বাইরে এসো
চেয়ে দেখো রংধনু,
চেয়ে দেখো সাতরং।
মিছিলের ভিড় ঠেলে সামনে এসো
দুঃখের পৃষ্ঠা উল্টে দেখো স্বপ্নের বাগিচা।”
আবার জেমস বলেছেন,
“নীরবে অভিমানে নিভৃতে
করছ তিলে তিলে নিজেকে শেষ
বন্ধু ভেঙ্গে ফেল এই কারাগার
খুলে দাও সে হৃদয় প্রণয়ের দ্বার।
দুঃখ আমার সাথেই আছে
তবু দেখ দুঃখী আমি নইতো
ডাক দিয়ে যায় প্রণয়মেলায়
এতেই নিহিত সুখ হয়তো
কীসের এত দুঃখ তোমার
সারাক্ষণ বসে বসে ভাবছ
পৃথিবীতে বলো বাঁচবে কদিন
সময়টাতো বড় অল্প।”
সেই জেমসই মানুষের দুঃখ ভুলিয়ে দিতে চেয়ে বলেছেন:
“তোমাদের মাঝে কি কেউ আছে বন্ধু আমার?
তোমাদের মাঝে কি কেউ আছে পথ ভোলা?
তবে বন্ধু নৌকা ভেড়াও, মুছিয়ে দেবো দুঃখ সবার।”
অকপটে নিজেকে শারাবি বলেও স্বীকারোক্তি দিয়ে জেমস বলেছেন:
“ডুবে আছি বিষে, ডুবে আছি পাপে
ওই আমার এক পা কার্নিশে
আরেক পা শূন্যে
শারাবে শারাব, ঘোরে ঘোর
ঘোরে ঘোর, তারপর ঘন ঘোর।
মুঠো খুলে চেয়ে দেখি
ওরে রেখায় রেখায় দুঃখ লেখা
বেদনার নদী বইছে আমার
বুকের ভেতর একা একা।
দু’চোখ বুঁজে আজও দেখি
ওরে চোখের পাতায় স্বপ্ন আঁকা
স্বপ্ন মুছে গেলে আমার
পৃথিবীটা ভীষণ ফাঁকা।”
আবার জেমস বলেছেন:
“আমি বিষ খেতে পারি না
তাই অমৃত চাই
আমি ছিলাম, আমি আছি
আমিই সেই শেষ শারাবি।
জেগে থাকা রাতের পানশালায়
ফিরে আসি বারবার
জেগে থাকা শেষ পেয়ালায়
চুমুকেই খুঁজি আশ্রয়, প্রশ্রয়।
জেগে থাকে বারটেন্ডার
জেগে থাকি আমি
জেগে থাকে শেষ রাতে
মাতাল সাথী।
প্রিয় সেই সুরার টানে
ফিরে আসি আমি
অমৃত সুধার ঘোরে কেটে যায়
ঘোর-যামিনী, রজনী।
জেগে থাকে শেষ রাত,
জেগে থাকে সিগনাল বাতি
জেগে থাকে রূপসী রাতে
সুন্দরী সাকি…।”
গানে গানে বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন আর একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের কথা তুলে ধরে জেমস বলেছেন:
“মনে পড়ে সুধাংশু
সেই উনিশ পাঁচ দুই
শ্লোগানে, মিছিলে একসাথে ছিলাম
সেই আমি আর তুই।
আমি ভুলি নাই তোরে
আমি ভুলি নাই বাংলা মায়ের
সাত কোটি সন্তানেরে
মনে পড়ে বন্ধু, মনে কি পড়ে তোর?
মনে পড়ে সুধাংশু,
সেই উনিশ সাত এক
দুজনার ছিলো কাঁধে কাঁধ,
আর হাতে ছিলো রাইফেল…।”
আবার দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ বাংলাদেশ গানে জেমস বলেছেন:
“তুমি মিশ্রিত লগ্ন মাধুরীর
জলে ভেজা কবিতায়
আছো সারওয়ার্দি, শেরেবাংলা
ভাসানীর শেষ ইচ্ছায়।
তুমি বঙ্গবন্ধুর রক্তে আগুন জ্বলা
জ্বালাময়ী সে ভাষণ
তুমি ধানের শীষে মিশে থাকা
শহীদ জিয়ার স্বপন।
তুমি ছেলে হারা মা জাহানারা ইমামের
একাত্তরের দিনগুলি
তুমি জসীমউদ্দীনের নকশী কাঁথার মাঠ
মুঠো মুঠো সোনার ধুলি।
তুমি ত্রিশ কিংবা তার অধিক
লাখো শহীদের প্রাণ
তুমি শহীদ মিনারে প্রভাত ফেরীর
ভাই হারা একুশের গান।
আমার সোনার বাংলা
আমি তোমায় ভালোবাসি
জন্ম দিয়েছো তুমি মাগো
তাই তোমায় ভালোবাসি।”
রাতের তারার মাঝে হারিয়ে ফেলা মাকে খোঁজার কথা বলে মানুষের চিরন্তন আবেগকে নাড়া দিয়েছেন জেমস। আবেগী কণ্ঠে তার আকুতি:
“দশ মাস দশ দিন ধরে গর্ভে ধারণ
কষ্টের তীব্রতায় করেছে আমায় লালন
হঠাৎ কোথায় না বলে হারিয়ে গেলো
জন্মান্তরের বাঁধন কোথা হারালো?
সবাই বলে ওই আকাশে লুকিয়ে আছে
খুঁজে দেখ পাবে দূর নক্ষত্র মাঝে।
রাতের তারা আমায় কি তুই বলতে পারিস?
কোথায় আছে কেমন আছে মা?
ভোরের তারা, রাতের তারা মাকে জানিয়ে দিস
অনেক কেঁদেছি আর কাঁদতে পারি না।”
আবার বাবা গানে জেমস বলেছেন,
“ছেলে আমার বড় হবে
মাকে বলতো সে কথা
হবে মানুষের মতো মানুষ এক
লেখা ইতিহাসের পাতায়।
নিজ হাতে খেতে পারতাম না
বাবা বলত ও খোকা
যখন আমি থাকব না
কি করবি রে বোকা?
এত রক্তের সাথে রক্তের টান
স্বার্থের অনেক ঊর্ধ্বে
হঠাৎ অজানা ঝড়ে তোমায় হারালাম
মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল
বাবা কতদিন, কতদিন
দেখি না তোমায়
কেউ বলে না তোমার মতো
কোথায় খোকা ওরে বুকে আয়।”
অনুমতি নিয়ে কবি শামসুর রাহমানের উত্তর কবিতা অবলম্বনে তারায় তারায় রটিয়ে দেবোর মতো নিটোল প্রেমের গান বেঁধেছেন জেমস। আবার কবি সুভাষ মুখার্জীর কবিতা থেকে গেয়েছেন পূবের হাওয়া। এছাড়া আসিফ ইকবাল, প্রিন্স মাহমুদ থেকে শুরু করে আসাদ দেহলভী, মারজুক রাসেল, লতিফুল ইসলাম শিবলী, মেছের মন্ডল, আসিরুদ্দিন মন্ডল, আনন্দ, সুমন, আশরাফ বাবু, দেওয়ান বাবু, সালাউদ্দিন সজল, লোকনাথ, বাপ্পী খান, আনন্দ, তরুণ মুন্সি, রাজীব আহমেদ, গোলাম মোরশেদ লায়ন, রনিম রহমানসহ একঝাঁক প্রতিভাবান গীতিকার অসাধারণ সব গান লিখেছেন জেমসের জন্য। তারা শুধু জেমসের জন্যই আলাদাভাবে গানগুলো রচনা করেছেন। বিষয় বৈচিত্রে ভরপুর ভিন্নধর্মী সেসব গানের সুর ও গায়কীতে নিজের দরদ পুরোটাই ঢেলে দিয়েছেন জেমস। তাদের সম্মিলিত প্রয়াসে একেকটা গান হয়ে উঠেছে একেকটা মাস্টারপিস যে গানগুলোর আবেদন কখনোই ফুরাবার নয়।
এক নজরে জেমসের যত গান:
অ্যালবাম: স্টেশন রোড
স্টেশন রোড
ঝর্ণা থেকে নদী
একদিন ছিল উচ্ছ্বল নদী
আমায় যেতে দাও
আগের জনমে
আর নয় যুদ্ধ
যদি এমন হতো
সত্যের সুন্দর
দুঃখ কেন করো
রূপ সাগর
গ্লাস বিট গেমস
এভার সিন্স ইউ
অ্যালবাম: অনন্যা
রিকশাওয়ালা
ফেরারি
দুরন্ত মেয়ে
অনন্যা
রংবাজ
রাজনীতি
পলাতক
রাতের ট্রেন
হৃদয়ের দাবিতে
টেলিফোন
তুমি জান
অ্যালবাম: জেল থেকে বলছি
জেল থেকে বলছি
নীল আকাশ
ইচ্ছের পালক
ভাবনা
জোসি প্রেম
আমার ভালোবাসা
হৃদয়ের একলা প্রান্তরে
পেশাদার খুনী
ঝড়ের রাতে
ঢাকার প্রেম
তোমাকে খুঁজি
প্রাণের শহর
অ্যালবাম: পালাবে কোথায়
পালাবে কোথায়
প্রিয় আকাশি
নাযায়েজ
পূর্ণিমা নৃত্য
হেরেমের বন্দিনী
সাদা অ্যাসট্রেটা
ভুলব কেমন করে
সাড়ে তিন হাত ভূমি
জবাব চাই
ভালোবাসার যৌথ খামার
অ্যালবাম: নগরবাউল
মান্নান মিয়ার তিতাস মলম
হারাগাছের নূরজাহান
তারায় তারায়
নগরবাউল
হোমায়রার নিঃশ্বাস
একটা প্রেম দাও
নাগ-নাগিনীর খেলা
কতটা কাঙাল আমি
যাত্রা
জঙ্গলে ভালোবাসা
নবজীবনের কথা বলছি
তবে বন্ধু নৌকা ভেড়াও
অ্যালবাম: দুঃখিনী দুঃখ করো না
দুঃখিনী দুঃখ করো না
বিবাগী
গিটার কাঁদতে জানে
জিকির
লুটপাট
সবুজ ওড়না উড়ে যায়
ঈশ্বর
সুলতানা বিবিয়ানা
তুমি যদি নদী হও
যার যার ধর্ম
যদি কখনও
ঘুমাও
অ্যালবাম: লেইস ফিতা লেইস
পথ
লেইস ফিতা লেইস
সারথি
দে দৌড়
সিনায় সিনায়
বায়োস্কোপের খেলা
লাগ ভেলকি লাগ
রাখে আল্লাহ মারে কে
হাউজি
খুলে দেখ মনটা
পূবের হাওয়া
দয়াল
অ্যালবাম: ঠিক আছে বন্ধু
এপিটাফ
মীরাবাঈ
পত্র দিও
পাখি উড়ে যা
শারাবে শারাব
কথা
জাত যায়
সুধাংশু
হা-ডু-ডু
এমনও নিশিরাতে
অ্যালবাম: দুষ্টু ছেলের দল
দুষ্টু ছেলের দল
বিজলি
একা
চিরটাকাল
ছোট্ট কিছু আশা
গতিরাজ
গ্যারান্টি নাই
জয় তরুণের জয়
কিছুই পেলাম না
মা ও মাটি
অ্যালবাম: আমি তোমাদেরই লোক
সাক্ষী আকাশ
দিদিমনি
দিল
আজিজ বোর্ডিং
দুখের পথ
লহো সালাম
যা কিছু বুঝেছ তুমি
আল্লাহু আকবর
জিন্দেগি টেস্টিং
আমি তোমাদেরই লোক
অ্যালবাম: জনতা এক্সপ্রেস
শুরু হবে
জনতা এক্সপ্রেস
যদি এ শীতে
নিঝুম
পোড়া চোখে
লিডার আসছে
সাঁঝের কবি
অঙ্গে অঙ্গে
লোকে বলে
কই কাউশ
অ্যালবাম: কাল যমুনা
কাল যমুনা
মাঝবয়সী মন
ভাঁজ খোলো
পুলকিত বিলাস
উঠছি
বন্ধু আমার
রব্বানা
মেয়ে গো
অ্যালবাম: তুফান
উঠেছে তুফান
নাগর আলি
এই বুকটা চিরে
একমুখী রাস্তা
সুরাইয়া
অবরোধ
শারাবি
কূলহারা
যেদিকে তাকাই
তুমি কাঁদলেই
বহু মিশ্র অ্যালবামেও অসাধারণ সব গান গেয়েছেন জেমস। তার মিশ্র অ্যালবামের তালিকা:
অ্যালবাম: টুগেদার
পরাধীন বাংলা
নাটোর স্টেশন
অ্যালবাম: গাঁয়ের খবর
গাঁয়ের খবর
অধিকার নেই
অ্যালবাম: সোনালী বিকেল
জেগে আছি
রইব নারে
তোমাকে বাঁশির মতো বাজাই
অ্যালবাম: শক্তি
জানালা ভরা আকাশ
আমি ও আঁধার
অ্যালবাম: স্ক্রু ড্রাইভারস
বাংলার লাঠিয়াল
যে পথে পথিক নেই
মধ্যরাতের ডাকপিয়ন
বেদুঈন
ব্যাবিলন
অ্যালবাম: ক্যাপসুল ৫০০ মি.গ্রা.
কতটা কষ্টে আছি
দূরে আছি তাই
যতটা পথ
হে পাগলি
নিষিদ্ধ ইতিহাস
অ্যালবাম: ধুন
চিরহরিৎ
একের ভিতর তিন
অ্যালবাম: বিতৃষ্ণা জীবনে আমার
লিখতে পারি না কোন গান
ভালোবেসে চলে যেও না
অ্যালবাম: দেয়াল
ফুল নেবে না অশ্রু
দেয়াল
অ্যালবাম: অপরিচিতা
স্বপ্নহারা
সুরের টানে
অ্যালবাম: নীরবতা
সাদাকালো
কিছুটা আশা
গান গাও
বন্ধু
অ্যালবাম: পিয়ানো
বাংলাদেশ
তুমি জানলে না
সমাধি
এক নদী যমুনা
দেবদাস
অ্যালবাম: দিওয়ানা মাস্তানা
দিওয়ানা মাস্তানা
বুকের পথ ধরে
এক আঁজলা চোখের জল
পেছনে তাকালেই
এক জনমের দুঃখ
অ্যালবাম: পাগলা হাওয়া
পাগলা হাওয়া
আসছ বসেছ ভবে
নদী
প্রেম যমুনার জলে
জুয়াড়ি
অ্যালবাম: আঁচল
কোন ফুলে দেব
রাখেনি আমায়
জলের তলে
ভুল ভালোবাসা
ধরতে পারি না
অ্যালবাম: বারো মাস
রাজকুমারী
লিখে নিও তুমি
অ্যালবাম: বাজনা
বদলাইনি আমি
একলা
জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি
মোট দশটা পাতা
অ্যালবাম: বৃহস্পতি
দুঃখওয়ালা
শততম দুঃখবার্ষিকী
তেরো নদী সাত সমুদ্দুর
মাঝে মাঝে
শুরু হলো ভালোবাসা
অ্যালবাম: চলতে চলতে
আমি-তুমি
চলতে চলতে
এখন সে চাঁদ
লুটোপুটি
শুধু তোর লাগি
অ্যালবাম: দেশে ভালোবাসা নাই
দেশে ভালবাসা নাই
বিদায় বান্ধবী বিদায়
সবই অভিনয়
জীবনটা সিগারেটের ছাই
কৃষ্ণ যখন কালো
অ্যালবাম: ধোঁয়া
সখী পত্রের শুরুতে
পালকি
অ্যালবাম: দহন
ফুলসজ্জা সন্ধ্যা
ওরে পাগলি
অ্যালবাম: দোস্ত দুশমন
আসমানের চাঁদ
দোস্ত দুশমন
সাঝেঁর বেলায়
চলেই যেতাম
ঈশানে জবর মেঘ
অ্যালবাম: জগৎবাড়ি
ব্যথার তোপধ্বনি
কবর
পাখি গান ধর
অ্যালবাম: টোন অ্যান্ড টিউন
শৈশব
এই রাত
অ্যালবাম: দাঁড়ারে
দাঁড়ারে
আদালতে দেখা হবে
অ্যালবাম: যন্ত্রণা
গুরু
বিদ্রোহী
যদি ভুল করে
নস্টালজিয়া
অন্ধ
অ্যালবাম: খেলারাম খেলে যা
খেলারাম খেলে যা
বনের পাখি
চলো যাই
সাধুগঞ্জে
লিখলাম চিঠি
অ্যালবাম: কুসুম কুসুম প্রেম
ভুল
চাওয়া পাওয়া
কুসুম কুসুম প্রেম
পাখির রূপ
অ্যালবাম: সারেগামা
দুঃখ ভোলার দিন
পরবাসী মন
পূবের বাতাস
শূন্য করে বুক
টিফিনের পয়সা
অ্যালবাম: সাত রঙের কষ্ট
চিরকুট
অপরাধী
খুব নিশীথে
নায়ক
নিয়ম শাসন বারণ
অ্যালবাম: উড়ু উড়ু মন
সবাই চলে আগে আগে
আমি এত যে তোমায়
কোনখানে কোন একদিন
অ্যালবাম: প্রিয়তমা বন্ধু আমার
আমার যত গান
মন পিপাসায় বুক ফাটে রে
অ্যালবাম: মাটি
মাওলা তুমি কাছে নাই
একটা কিছু কর গুরু
চলরে মন
আর কত কাঁদাবে
চাকুরী
অ্যালবাম: দীর্ঘশ্বাস
পাগলা বাবা
নন্দিনী ও নন্দিনী
নিবেদিতা
স্যার
বৃষ্টি
অ্যালবাম: প্রতারণা
সুলতানা
মন লাগে না
আজ থেকে তুমি পর
ও ভ্যালেন্টাইন
আহা কবিতা
অ্যালবাম: দেনা পাওনা
আমি বাদ হয়ে
ফিরে আসবো বাংলায়
পাগলী
অ্যালবাম: আমায় ভুলিসনা
রাস্তাঘাট দেইখা চলিস
এখানে সারাবেলা
অ্যালবাম: নকশী কাঁথা
বড় অচেনা
গোপনে
অ্যালবাম: সুন্দরী
তোমারই কারণে
বিধাতা
ছুঁয়ে দেখো
অ্যালবাম: দিল
ঘর
শুনতে কি পাও
ডাকাডাকি
তুমি কার কে তোমার
কাল রাতে
অ্যালবাম: ভালবাসতে মন লাগেরে
পাগল আমি
কত সহজে বদলায় মন
আমি তোর মনের মতো
বাপের বাড়ি
কাগজের মতো করে
অ্যালবাম: উতলা ঢেউ
দুই চোখে উতলা ঢেউ
যে অন্তরে
মেঘের সাথে
তাহার রূপে
তুমি পেরেছিলে
অ্যালবাম: নয় ছয়
নয় ছয়
পরলে চোখের পলক
কাঁকন
কানামাছি
প্রশ্ন
অ্যালবাম: শেষ দেখা
এই গান শেষ গান
অ্যালবাম: রঙ্গমেলা
রঙ্গমেলা
অ্যালবাম: আলোড়ন
গ্রিনরুমের বাতি
অ্যালবাম: এখনও দুচোখে বন্যা
মা
অ্যালবাম: হারজিৎ
বাবা
অ্যালবাম: তারাদের গুঞ্জনে
শুধু পথচলা
অ্যালবাম: তারকামেলা
যত দূরে যাও
অ্যালবাম: একটি গোলাপ
ভালোবাসো ভালোবেসে যাও
অ্যালবাম: শুধু তোমারই কারণে
প্রথম স্পর্শ
অ্যালবাম: দশে দশ
আকাশনীলা
অ্যালবাম: দেখা হবে বন্ধু
দুঃখ উড়াই
অ্যালবাম: স্রোত
পাপী
অ্যালবাম: ও আমার প্রেম
কবিতা
অ্যালবাম: সাদাকালো
ডায়েরি
অ্যালবাম: মেয়ে
দেখে যারে তুই
অ্যালবাম: দাগ থেকে যায়
ভুল
অ্যালবাম: বহুরূপী
আমি এক বহুরূপী
অ্যালবাম: দেবী
বোমা মফিজ
অ্যালবাম: দুঃখিনী মা
কাছ থেকে দূরে যাওয়া
অ্যালবাম: একটি নারী অবুঝ
রাষ্ট্র
অ্যালবাম: ইস্কার টেক্কা
আর নয়
অ্যালবাম: মেহেদি রাঙা হাত
আমি গান গাইলে
অ্যালবাম: প্রয়োজন
ভালোবাসা দে
অ্যালবাম: একা উদাসী মনে
খোদা ভগবান ঈশ্বর
অ্যালবাম: পাগলা পানি
কত যে খুঁজেছি
অ্যালবাম: তুমি
সূর্য
অ্যালবাম: তিতা মিঠা
তুমি গতকাল ছিলে আমার
অ্যালবাম: সীমানা
বৃষ্টির জলে ভিজেছে
অ্যালবাম: সন্ধি
বর্ষা
একাধিক নাটক ও বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রের গানেও কণ্ঠ দিয়েছেন জেমস। বলিউডের একাধিক ছবিতে হিন্দি গানে কণ্ঠ দিয়ে বিভিন্ন মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।
নাটকের গান:
চৈতা পাগল
রোশনি
প্লেব্যাক:
চলচ্চিত্র: মনের সাথে যুদ্ধ
আসবার কালে আসলাম একা
চলচ্চিত্র: মাটির ঠিকানা
মাটির ঠিকানা
চলচ্চিত্র: সুইটহার্ট
বিধাতা
চলচ্চিত্র: লালটিপ
ভোলা মনরে
চলচ্চিত্র: ওয়ার্নিং
এত কষ্ট কষ্ট লাগে
চলচ্চিত্র: জিরো ডিগ্রি
প্রেম ও ঘৃণা
চলচ্চিত্র: দেশা- দ্য লিডার
দেশা আসছে
চলচ্চিত্র: সত্ত্বা
তোর প্রেমেতে অন্ধ হলাম
হিন্দি প্লেব্যাক:
চলচ্চিত্র: গ্যাংস্টার
ভিগি ভিগি
চলচ্চিত্র: ও লামহে
চাল চালে
চলচ্চিত্র: লাইফ ইন এ মেট্রো
রিশতে
আলবিদা (রিপ্রাইস)
চলচ্চিত্র: ওয়ার্নিং থ্রিডি
বেবাসি