আজ থেকে প্রায় ৭২০ বছর আগে ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে ইয়েমেন থেকে বাংলাদেশে আসা ইসলাম ধর্মপ্রচারক হজরত শাহ জালালের মাজার রয়েছে সিলেট শহরে।
শাহ জালাল মাজারের উত্তর দিকে বড় একটি বাঁধানো পুকুরে বিশাল বিশাল গজার মাছ দেখতে পাওয়া যায়। মাছগুলো আপন মনে সাঁতার কেটে বেড়ায় পুকুরের পানিতে।
পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে পানিতে খাবার ছিটিয়ে ডাক দিলেই মাছগুলো পুকুর পাড়ের দিকে চলে আসে। মানুষকে ভয় না পেয়ে সহজ-স্বাভাবিকভাবে খাবার খেতে থাকে।
এসব গজার মাছ নিয়ে প্রচলিত আছে নানা কাহিনি। প্রচলিত কাহিনি অনুযায়ী, এসব বিশাল আকৃতির গজার মাছ পুষতেন হজরত শাহ জালাল নিজেই।
এ কারণে আজও মাছগুলো বিশেষ ভালোবাসা পায় মাজারের লোকদের পাশাপাশি সেখানে আগত ভক্ত ও সাধারণ দর্শনার্থীদের কাছেও। তারা পরম মমতায় গজার মাছগুলোকে পুকুরের পাড়ে দাঁড়িয়ে হরেক রকম খাবার খাওয়ান।
কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না, আজ থেকে প্রায় দুই দশক আগে ২০০৩ সালের ৪ ডিসেম্বর শাহ জালাল মাজারে অবস্থিত সেই পুকুরে বিষ ঢেলে দিয়েছিল কে বা কারা।
বিষ প্রয়োগের কারণে পুকুরে থাকা সাত শতাধিক নিরীহ গজার মাছের মৃত্যু হয়। আজও শনাক্ত হয়নি কে বা কারা এমন অমানবিক কাজটি করেছিল। কেনই বা তারা এভাবে এতগুলো গজার মাছ হত্যা করেছিল তা-ও এক রহস্য। হত্যার শিকার গজার মাছগুলোকে কবর দেওয়া হয়েছে মাজার প্রাঙ্গণেই।
ঘটনার পর পুরোপুরি মাছশূন্য হয়ে যায় শাহ জালাল মাজারের পুকুরটি। পরবর্তী সময়ে ঘটনার প্রায় দুই বছর পর অন্যত্র থেকে গজার মাছ এনে ছাড়া হয় সেই পুকুরে।
৭২০ বছর আগে ইয়েমেন থেকে বঙ্গে আসার সময় শাহ জালালের সফরসঙ্গী ছিলেন শাহ মোস্তফা। তার মাজার মৌলভীবাজারে অবস্থিত। সেই মাজারের পুকুরেও আছে বিশাল বিশাল গজার মাছ।
শাহ জালাল মাজারের পুকুরে বিষ দিয়ে গজার মাছ হত্যার পর সেখানে ২০০৪ সালের জানুয়ারি মাসে মৌলভীবাজারে অবস্থিত শাহ মোস্তফা মাজারের পুকুর থেকে ২৪টি গজার মাছ এনে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে ধীরে ধীরে শাহ জালাল মাজারের পুকুরে বাড়তে থাকে গজার মাছের সংখ্যা।
